জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করুন। (Easy Process)
আপনার জন্ম সনদে যদি কোনো ভুল হয় তাহলে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আপনার জন্যে আবশ্যক।আমরা কিছু Amazing টিপস শেয়ার করবো যাতে আপনার সহযে ঘরে আপনার Birth Certificate Correction করতে পারেন।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন সম্পর্কে এ টু জেড ধারণা এই কন্টেন্ট থেকে পেয়ে যাবেন।
জন্ম নিবন্ধন সনদে ভুল করেছেন? জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে এ টু জেড ধারণা দিবো।
কিভাবে সংশোধন করা হয়? সংক্ষেপে বলছি-
প্রথমে Bdris.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হয়। তারপর মেনু বাটন থেকে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন এর লিংকে প্রবেশ করতে হয়।
সেখানে আপনার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার, জন্ম তারিখ দিয়ে কনফার্ম করবেন যে আসলেই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে চান কি না।এরপর হ্যা তে ক্লিক করে পরবর্তী পেজে গিয়ে যেসব তথ্য সংশোধন করতে চান তা যুক্ত করবেন। এরপর শেষে সংশোধনের পক্ষে যা যা প্রমাণ আছে তা দাখিল করে এপ্লিকেশন কম্পিলিট করতে হয়।
জন্ম নিবন্ধন তৈরি করার সময়ে আমরা কেনো জানি নিয়মিতই “বাংলা নাম“, “ইংরেজি নাম“, “পিতার নাম“, “মাতার নাম” , “জন্ম তারিখ” এগুলো ভুল করি।যথারীতি ভুল করে পস্তাই। জন্ম নিবন্ধন বানানোর জন্যেই এজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হয়।
আমাদের দেশের দূর্নীতির সিস্টেম সম্পর্কে তো জানেনই। কিভাবে মানুষকে হয়রানি করে টাকা আদায় করা হয়। বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশন এর এলাকাগুলোতে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করা অনেক হয়রানির কাজ।
কিছু গ্রাম আছে আবার একদম ভিন্ন। সেখানে একদম নির্ধারিত ফি এর মধ্যেই জন্ম নিবন্ধন বিষয়ক যেকোনো কাজ করে দেয়।
যদি ভাগ্য ভালো থাকে তো ভালোই ভালোই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করতে পারবেন। নয়তো হয়রানি হয়াই লাগে। এসব কথা কেনো বলছি? আসুন বলি।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্যে যে আপনি আবেদন করবেন তার সবটুকু অনলাইনে করতে পারলেও, জন্ম নিবন্ধন সনদ টা তুলতে ঠিকই আপনাকে ইউনিয়ন পরিষদ যেতে হবে।
আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, ইউনিয়ন পরিষদ যদি যেতেই হয় তাহলে অনলাইনে আবেদন করে লাভ কি হলো! লাভ নিশ্চুয়ই আছে। সংশোধন আবেদনের তথ্যগুলো আপনি নিজেই পূরণ করতে পারছেন, কোনো সন্দেহ থাকছে না, এটা একটা এডভানটেজ।
আমরা সবাই জানি, ইউনিয়ন পরিষদে যিনি জন্ম নিবন্ধনের সকল কাজের দ্বায়-দায়িত্বে থাকেন, তারা কিভাবে এসব তথ্য অসাবধানতার সাথে পূরণ করেন।যদিও সব ইউনিয়ন পরিষদে এরকম হয়না।
উপরন্তু আপনার অনেক সময় বেচে যাবে। সংশোধনের এই তথ্য সংযোজনের কাজটি যদি আপনি অনলাইনে করতে পারেন তাহলে আপনার জন্ম নিবন্ধন হাতে পাওয়ার সময় অনেকটাই কমে আসবে।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন অনলাইনে করলে আপনার হয়রানিও কমে আসবে, আপনাকে বারবার ইউনিয়ন পরিষদের উঠানে দৌড়াতে হচ্ছে না।তো আসুন আলোচনা করি, কিভাবে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করবেন।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
জন্ম নিবন্ধন যেহেতু সংশোধন করবেন তাহলে তো অবশ্যই কাগজপত্র লাগবে। মোটা অংকে, আপনার একাডেমিক সার্টিফিকেট, আইডি কার্ড থাকলে আইডি কার্ড, পিতা মাতার আইডি কার্ড, পিতা মাতার জন্ম সনদ, বাসা বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্যাক্সের কাগজ না থাকলে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ(ইউটিলিটি বিল)।
এছাড়াও হাসপাতাল কতৃক প্রণীত সনদ, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের থেকে নেয়া প্রত্যয়নপত্র ইত্যাদি।
তবে আপনি জন্ম নিবন্ধনের কি কি সংশোধন করছেন তার উপর কাগজপত্রের চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন।
নিজের নাম পরিবর্তনের জন্যে আবেদনের জন্য কাগজপত্র
- শিশু হলে টিকা কার্ড(EPI card)।সাথে যে হাতপাতাল থেকে সিজার করা হয়েছে সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় যে সনদটি দেয়া হয়েছে সেটি। অথবা কোনো প্রথম শ্রেণির ডাক্তারের কাছ থেকে নেয়া প্রত্যয়নপত্র।
- শিক্ষার্থী হলে, একাডেমিক যেকোনো সার্টিফিকেট।( পিএসসি, জেসসি, এসএসি,এইচএসি, অনার্স ইত্যাদি) বয়সভেদে সার্টিফিকেটর তারতম্য করতে পারেন।আইডি কার্ড থাকলে আইডি কার্ড।
যেহেতু আপনি নাম সংশোধন করবেন তাই সংশোধনের সময় যে নামটি দিবেন তার বিপরীতে আপনার যা প্রমাণ আছে তাই উল্লেখ করবেন। যদি পিএসসি/ জেএসসি/ এসএসসি ইত্যাদি সার্টিফিকেট অনুযায়ী নাম পরিবর্তন করতে চান তাহলে প্রমাণ হিসেবে সেসব সার্টিফিকেটই উল্লেখ করবেন।
অযথা ভুল নাম সম্বলিত ছোট বেলার টিকা কার্ড, আইডি কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদি উল্লেখ করবেন না।
আবার বলছি, আপনার সংশোধনের পক্ষে যা প্রমাণ আছে সেসব কাগজপত্রই লাগবে।
- আপনার পাসপোর্ট থাকলে সেটি লাগবে।অথবা সরকারি যেকোনো সনদ প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করতে পারবেন।
পিতা মাতার নাম পরিবর্তনের জন্যে কাগজপত্র।
- প্রাথমিকভাবে পিতামাতার নাম পরিবর্তনের জন্য তাদের (পিতার নামের জন্যে পিতার/ মাতার নামের জন্যে মাতার) জন্ম সনদ প্রমাণ হিসেবে দেয়া লাগে।(পিতা মাতার জন্ম সনদে ভুল থাকলে সেটি আগে পরিবর্তন করে নিতে হবে)
- পিতা-মাতার আইডি কার্ড দিতে হবে।
- পিতা-মাতা বা পিতা অথবা মাতা যেকোনো একজন মৃত্যুবরণ করলে মৃত্যুর প্রমাণপত্র দাখিলপূর্বক আবেদন করতে পারবে। তবে ২০০১ এর আগে পিতা বা মাতা কেউ মারা গেলে প্রমাণপত্র দাখিল করা লাগে না।
জন্ম তারিখ পরিবর্তন করার জন্য কাগজপত্র
সর্বশেষ ০৬-০২-২০২৩ সালে রেজিট্রার জেনারেল মো:রাসেদুল হাসান এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করা বন্ধ করে দেন।
তবে আপনি যদি চান তবে আপনার জন্মসালের মাস ও জন্মের তারিখ চেঞ্জ করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কিংবা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের অফিসে আবেদন জমা দিতে হবে। সেখানে অনুমতি নিয়েই কেবল জন্ম সনদের তারিখ পরিবর্তন করতে পারবেন।
স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য কাগজপত্র।
- কাউন্সিলর বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর কাছ থেকে নেয়া প্রত্যয়নপত্র।
- স্থায়ী ঠিকানায় যদি বাসার হোল্ডিং ট্যাক্স এর কাগজ থাকে তাহলে তা লাগবে।
- বিদ্যুৎ বিলের কাগজ সাথে লাগবে।
বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য কাগজপত্র।
- এজন্য শুধুমাত্র আপনি বাসার বিদ্যুৎ বিলের কাগজটি প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন
জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্যে আপনাকে জন্ম নিবন্ধনের সরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। সরকারি ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশ সরকারের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের অধীন। এটিই মূলত জন্ম নিবন্ধনের সকল কাজ নিয়ন্ত্রন করে থাকে।
সংশোধনের জন্যে পিসি দিয়ে কাজ করা আমরা উৎসাহিত করি। মোবাইল দিয়েও জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করা যায়।
#ধাপ-০১: জন্ম নিবন্ধন যাচাইকরণ
প্রথমে আপনি আপনার মোবাইল অথবা পিসি থেকে এই লিংকে যান https://bdris.gov.bd/br/correction
বোঝানোর সুবিধার্তে আমরা পিসি থেকে নেয়া স্ক্রিনশট উল্লেখ করবো। মোবাইলেও ঠিক একই রকম প্রোসেস। কোনো কমবেশী নাই।
অথবা আপনি গুগলে bdris.gov.bd সার্চ করে প্রথম ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন / সরাসরি প্রবেশ করবেন। ওয়েবসাইটের উপরে থ্রি ডটস দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের লিংক খুজে পাবেন।
লিংকে প্রবেশ করে নিচের দিকে দুইটা ঘর দেখতে পাবনে যেখানে আপনার ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্ম তারিখ চাচ্ছে।এগুলো প্রবেশ করাবেন। ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নাম্বারই লাগবে। ১৬ ডিজিট বা এর কম হলে এটাকে ১৭ ডিজিট করে নিতে হবে।
উপযুক্ত তথ্য প্রবেশ করিয়ে এরপর ক্যাপচা লিখবেন। মূলত ক্যাপচার নিচে যা লিখা আছে তা হুবহু কপি পেস্ট মারবেন(লিখে)। এরপর অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করবেন।
এরপর ছোট করে স্কিনে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য দেখতে পাবেন। আপনাকে স্কিনের ডানপাশে নির্বাচন করুন বাটনে ক্লিক করে সংশোধনের আবেদন শুরু করতে হবে।
#ধাপ-০২: নিবন্ধন কার্যালয় নিশ্চিকরণ
এই ধাপে আপনাকে নিবন্ধন কার্যালয় নির্বাচন করতে হবে যেখানে থেকে আপনি বা ভিকটিমের(যার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করছেন) জন্ম নিবন্ধন বানিয়েছেন। এটা হতে পারে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কার্পোরেশন, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড ইত্যাদি।
উল্লেখ্য: স্কিনে যতগুলো চাহিত তথ্যের নামের উপরে লাল দাগ দেয়া স্টার দেখতে পাচ্ছেন সেখানে সে তথ্যগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।তাই সতর্কের সাথে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তথ্য পূরণ করবেন।
উপরের দেখানো স্ক্রিনশটএর স্থানগুলোতে দেশ, বিভাগ, উপজেলা যথাযথভাবে পূরণ করুন।
#ধাপ-০৩: জন্ম তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন।
এখান থেকেই মূলত জন্ম তথ্য সংশোধনের মূল প্রক্রিয়া শুরু।আপনি এখানে একটু সতর্কের সাথ্র তথ্যগুলো পূরণ করবেন।
উল্লেখ্য, আপনি সর্বোচ্চ চারবার জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন করতে পারবেন।
—সংশোধনে বিষয় সিলেক্ট
আপনি জন্ম নিবন্ধন সনদের যে বিষয়টা চেঞ্জ করতে চান সেটিই এখানে চেকবক্সে উল্লেখ করবেন। এটা হতে পারে বাবার নাম,মায়ের নাম কিংবা নিজে নাম কিংবা ঠিকানা।
আপনার বাংলা নামের ভুল হলে বাংলা নাম সিলেক্ট করবেন, ইংরেজি নাম ভুল হলে ইংরেজি নাম সিলেক্ট করবেন।
তবে আপনার একইসাথে অনেকগুলো তথ্য যেমন আপনার বাংলা নাম এবং ইংরেজি নাম সাথে পিতা মাতার নামেরও ভুল হতে পারে। তাহলে তাদেরটা কিভাবে সংশোধন করবেন?
চিন্তা নেই, নিচেই আরোও তথ্য সংযোজন করুন নামে একটু অপশন দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে ক্লিক করে আপনি একাধিক তথ্য সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন।
–চাহিত সংশোধিত তথ্য
এই বক্সে আপনি সংশোধিত তথ্যের সঠিকটা লিখবেন। যদি ইংরেজি নামে ভুল থাকে তো ইংরেজি সঠিক নামটা লিখবেন( সব বড় হাতের অক্ষরে)
–সংশোধনের কারণ
সংশোধনের কারণ হিসেবে আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যে কারণ সেটিই বসাবেন। এক্ষেত্রে কখনোই ভুল তথ্য প্রদান করবেন না।
এভাবে ইচ্ছামতো আপনি যতগুলো তথ্য সংশোধন করতে চান ততগুলো আবেদন করতে পারবেন, আরও তথ্য সংযোজন করুন বাটনে প্রেস করে।
#ধাপ-০৪: জন্মস্থানের ঠিকানা পূরণ
এখানে আপনাকে জন্ম স্থানের ঠিকানা পূরণ করতে হবে। আপনার জন্ম নিবন্ধন হাতে নিয়ে সেখানে ঠিকানাগুলো ভালোভাবে এই ধাপে সংযোজন করে দিবেন।
অনেকেই সমস্যায় পড়তে পারে যে, আমিই আবেদন ই করলাম ঠিকানা পরিবর্তনের কারণে । তাহলে আমি এখানে কি ঠিকানা দিবো।এখানে আপনি সেই ঠিকানাই দিবেন যেটি আপনি সংশোধনের জন্য আবেদন করেছিলেন। অর্থাৎ সঠিক ঠিকানা(যেখানে আপনি ঠিকানা করতে চান)।
আর যাদের ঠিকানা নিয়ে কোনো সমস্যা নাই, তারা জন্ম নিবন্ধন সনদ হাতে নিয়ে জন্মস্থানের ঠিকানা হুবহু কপি পেস্ট করবেন।
বাংলা ও ইংরেজিতে যেহেতু ঠিকানা পূরণ করতে হবে তাই ইংরেজি নামগুলো পূরণ করার ক্ষেত্রে আপনি বড় হাতের অক্ষর ব্যবহার করবেন।
এছাড়াও জন্মস্থানের ঠিকানা হিসেবে গ্রামের নামের পাশাপাশি, রাস্তা ও বাসা নম্বর চাইবে। গ্রামে যারা বাস করে তাদের তো আর রাস্তার নাম নেই কিংবা বাসা নাম্বার নেই। তারা তখন রাস্তার নাম হিসেবে তাদের বাড়ির কর্তার নাম ব্যবহার করবে। যেমন বাবা বা দাদার নাম ছমীর আলী হলে ছমীর আলী রোড।এভাবে ইংরেজিতেও লিখতে হবে (বড় হাতে অক্ষরে)
#ধাপ-০৫: স্থায়ী ঠিকানা পূরণ
জন্ম স্থানের ঠিকানার মতো স্থায়ী ঠিকানাও পূরণ করতে হবে। জন্ম সনদ দেখে এগুলোও পূরণ করে নিন। উপরের কথাগুলো এখানেও প্রযোজ্য।
#ধাপ-০৬: আবেদনকারীর তথ্য
এই ধাপে আবেদনকারীর তথ্য দিতে হয়। অর্থাৎ, জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদনের জন্য যে ব্যক্তিটি আবেদন কার্য সম্পাদন করছে তার তথ্য।
–আবেদনাধীন ব্যক্তির সহিত আবেদনকারীর সম্পর্ক
এখানে আপনি নিজেই যদি নিজের জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করে থাকেন তাহলে নিজ সিলেক্ট করুন।
কিংবা আপনি যদি পিতা হয়ে নিজে সন্তানে জন্য সংশোধনের আবেদন করছেন তাহলে সেখানে পিতা বা মাতা সিলেক্ট করবেন। কিংবা অন্য কেউ হলে, যথাযথ সম্পর্ক উল্লেখ করবেন।
- পিতা আবেদন করলে পিতা
- মাতা আবেদন করলে মাতা
- দাদা আবেদন করলে পিতামত
- দাদী আবেদন করলে পিতামহি
- নানা আবেদন করলে মাতামহ
- নানী আবেদন করলে মাতামহি
- কোনো অভিভাবক আবেদন করলে অভিভাবক সিলেক্ট করতে হবে।
- কিংবা অন্যান্য( অপরিচিত, কম্পিউটারের দোকানের কেউ ইত্যাদি ইত্যাদি) হলে অন্যান্য সিলেক্ট করতে হবে।
— আবেদনকারীর নাম
আবেদনকারীর নাম পুরোটায় বাংলায় লিখতে হবে। আপনি নিজেই আবেদন করলে আপনার নাম। দাদা,দাদি, নানা,নানী, অভিভাবক কিংবা কম্পিউটারের দোকানের কেউ আবেদন করলে তার নাম।
–আবেদনকারীর ঠিকানা
আবেদনকারীর ঠিকানা এখানে লিখতে হবে।
—আবেদনকারীর মোবাইল নাম্বার
আবেদনকারীর মোবাইল নাম্বার অবশ্যই দিতে হবে। এটি কোনোভাবেই মিস করবেন না। যেই আবেদন করবেন তারই মোবাইল নাম্বার দিবেন। অবশ্যই তা সচল যেনো থাকে।
মোবাইল নাম্বার দেওয়ার পর সেখানে বড় করে ওটিপি পাঠান অপশন পাবেন। সেখানে প্রেস করলে সেই নাম্বারে ওটিপি যাবে। এবং নিচের ঘরে প্রবেশ করিয়ে দিবেন।submit button এ ক্লিক করবেন।
—আবেদনকারীর ইমেইল
আপনি চাইলে এখানে একটি ইমেইল দিতে পারেন। ইমেইল না দিলেও সমস্যা নেই। তবে ইমেইল দিলে ভালো হয়।
#ধাপ-০৬: কাগজপত্র সংযোজন(তুলনামূলক কঠিন)
এই ধাপে আপনাকে তথ্য সংশোধনের বিপরীতে প্রমাণপত্র হিসেবে বিভিন্ন কাগজ পত্র সংযোজন করতে হবে।
আমি আপনাকে আগেই কোনটি সংযোজন করতে কি কাগজ লাগবে তা বলে দিয়েছি।
নিজের নামের বিপরীতে কি কি কাগজপত্র লাগে? নিজের নাম একইসাথে বাবা নাম হলে দুইজনের আলাদা আলাদা করে কাগজপত্র লাগে, তবে একই কাগজ দুইবার দেয়া লাগে না।
এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে তথ্য সংযোজন করবো।
উল্লখ্য: ফাইল আকারে(ফটো কিংবা পিডিএফ আকারে) প্রত্যেকটি তথ্য সংযোজন করার সময় কোনো ফাইলের আকার 200kb এর উপর হওয়া যাবে না। তা না হলে ফাইল আপলোড হবে না।
—জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য কিংবা আবেদনের জন্য ২০০kb এর নিচে কিভাবে ফাইল তৈরি করবো?
এজন্য আপনি মোবাইলের রেজুলেশন কমিয়ে নিয়ে কাগজপত্রের ছবি তুলবেন। তারপর তা চেক করবেন ২০০kb হয়েছে কি না। তারপর আপলোড দিতে পারেন।গুগল ক্রোমে ট্যাব রেখে এগুলো কাজ করতে পারবেন।
এরপরও না হলে করনীয় কি?
ইমেজ কম্প্রেসর(Image Compressor) এপ্সের ব্যবহার।
আপনি প্লে স্টোরে অনেকগুলো ইমেজ কম্প্রেসর এপ্স পাবেন। এগুলো দিয়ে আপনি সহজের বড় সাইজের ইমেজকে ছোট সাইজে পরিণত করতে পারবেন।
আমি আপনাকে রিকমেন্ড করবো আপনি Litphoto এপ্সটি ইউজ করবেন। এটি সহজের আপনার তোলা ইমেজকে ২০০ কেবিতে ভালো মানের ইমেজে রূপান্তর করতে পারবে। খেয়াল রাখবেন যাতে ইমেজের ভিতরের তথ্য ঠিকমতো বোঝা যায়।
অনেক ক্ষেত্রে Litphoto তেও কম্প্রেস করতে গেলে ছবি খারাপ হয়ে যায়। তখন কি হবে?
চিন্তা নেই, আমাদের Camscanner আছে।
জন্ম নিবন্ধনের জন্য Camscanner এর ব্যবহার
আপনি এজন্য গুগল প্লে স্টোর থেকে ক্যামস্কানার এপ্সটি ডাউনলোড করে নিবেন। এটি নিত্যদিনে অনেক কাজ লাগে।
আপনি এটি ওপেন করে উপযুক্ত কাগজপত্রের ছবি তুলে black and white করে নিবেন। তারপর তা ব্যবহার করবেন।
#ধাপ-০৭: পেমেন্ট এর মাধ্যম
আপনাকে এখানে পেমেন্ট এর মাধ্যম সিলেট করতে হবে।
- জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের নির্ধারিত ফি হচ্ছে ৫০ টাকা। এটি প্রধানমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন।
- বিদেশে সংশোধনের আবেদন করলে ফি ১ ডলার।
পেমেন্টের মাধ্যম দুটি। চাইলে অনলাইনেই পেমেন্ট করতে পারবেন। তবে অনলাইন পেমেন্টে সমস্যা হচ্ছে ইদানিং।তাই আমি রিকমেন্ড করছি এখানে আপনি ফি আদায় সিলেক্ট করবেন।
আর অনলাইমে পেমেন্ট করলে চালানের কপি সংগ্রহ করতে হয়। এটা আরেক ভেজাল।
মোটামুটি আপনার সমস্ত কাজ করা শেষ। এখন আপনি সবগুলো তথ্য চেক করেন আবার। ভালো করে। চাইলে পূর্ববর্তী বাটনে ক্লিক করে আগের পেজে গিয়ে তথ্যগুলো পুনরায় দেখুন, সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না।
সর্বশেষে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে আপনি আবেদনটি জমা দেবেন।
পরের পেজে আপনি একটা জন্ম নিবন্ধন আবেদনপত্রের নম্বর পাবেন। যেটি আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে। মোবাইল দিয়ে এসব কাজ করলে আপনি আবেদন নাম্বারটি স্ক্রিনশট দিয়ে রাখবেন।
আর পিসি দিয়ে কাজ করলে আবেদন পত্রের কপিটি প্রিন্ট করে নিবেন। প্রিন্ট করুন বাটনে ক্লিক করলে প্রিন্ট শুরু হবে।
মোবাইল ইউজাররা আরেকটি কাজ করতে পারেন।আপনারাও প্রিন্ট করুন বাটনে ক্লিক করলে দিকে PDF নামের অপশন পেয়ে যাবেন সেখানে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিবেন।
এরপর অবশ্যই এটি স্থানীয় কম্পিউটারের দোকানে প্রিন্ট করে নিবেন।(অবশ্যই)
এরপর এটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তোলার পালা
আমাদের মেইন ওয়েবসাইট: Bay Of Education
নতুন জন্ম নিবন্ধন সনদটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কিভাবে তুলবো?
জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের আবেদন করার পরও আপনাকে ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হবে কারণ নতুন জন্ম নিবন্ধন সনদে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিব এর স্বাক্ষর লাগে। তাই।
ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তোলার জন্য আপনাকে আবারও সেম কাগজপত্রের ফটোকপি+সংশোধন আবেদনপত্রের কপি(না করলে আবেদন নাম্বারটি তাদের বলে দিতে হয়) সহ ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিলে আপনি ৩ দিন- এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন সংশোধিত জন্ম নিবন্ধন সনদ পেয়ে যাবেন।
তবে অবশ্যই কাগজপত্রগুলো প্রিন্ট করে নিতে হবে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জন্ম সনদ সংশোধনের ফি ৫০ টাকা হলেও প্রায় সব ইউনিয়ন পরিষদে ২০০-৩০০ টাকা আদায় করে। এটি আমাদের সবার জানা।সবচেয়ে হয়রানি হয় কিছু এলাকায় ৭ দিনেও তারা কাজটি করে না।
আমাদের (____) দূর্নীতিপরায়ণ হওয়ায় আজ আমাদের এই অবস্থা।যাহোক।
এভাবেই মূলত আপনি জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন ও কাজটি সফলভাবে শেষ করতে পারবেন।
এখন আসুন কিছু আলাদা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করি।
জন্ম নিবন্ধন বয়স সংশোধন করার নিয়ম।
আপনি যদি আপনার বয়স সংশোধন করতে চান তাহলে তা করতে পারবেন না, তবে উপযুক্ত প্রমাণপত্র দিয়ে আপনি শুধুমাত্র জন্ম মাস ও জন্মের তারিখ পরিবর্তন করতে পারবেন।
সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স, একাডেমিক সার্টিফিকেট কিংবা আইডি কার্ড দিয়ে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন অবস্থা
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদনের বর্তমান অবস্থা: আপনার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদনের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে ভিজিট করুন https://bdris.gov.bd/br/application/status
ভিজিট করে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং আবেদন নাম্বার দিয়ে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের বর্তমান অবস্থা জানতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন পত্র প্রিন্ট
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন প্রিন্ট: জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের কাজ যারা মোবাইলে করেন তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তীতে আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করতে হয়।প্রিন্ট করার জন্য অবশ্যই আপনার আবেদন নম্বরটি থাকতে হবে।
প্রিন্ট করতে ভিজিট করুন এই লিংকে: https://bdris.gov.bd/application/print
এরপর আবেদনের ধরণ হিসেবে সংশোধন সিলেক্ট করুন। তারপর আবেদন নাম্বার দিন এবং শেষে আপনার জন্ম তারিখ দিন।
এভাবে বের করে কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রিন্ট করে নিন।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন সম্পর্কিত প্রশ্নমালা
FAQ’s
জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আপনাকে প্রথমে ভিজিট করতে হবে bdris.gov.bd/br/correction । তারপর সেখানে আপনাকে উপযুক্ত তথ্যদিয়ে সংশোধন আবেদন করতে হবে। এবং শেষে ইউনিয়ন পরিষদ গিয়ে সনদটি তুলতে হবে।
জন্ম নিবন্ধনের প্রায় সব সংশোধন করা যায় তবে জন্ম তারিখ সংশোধন করা যায় না। তবে আপনি তথ্য প্রমাণ দিয়ে জন্মের মাস ও তারিখ চেঞ্জ করতে পারবেন কিন্তু জন্ম সাল পরিবর্তন করতে পারবেন না।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে ৫০ টাকা লাগে যা সর্বশেষ নীতিমালায় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে দেশের সরকারি অফিসের কর্মচারীদের নৈতিকতা নিয়ে আপনারা সবাই অবগত আছেন নিশ্চয়ই।বিদেশ থেকে আবেদন করলে ১ ডলার।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন অবস্থা চেক করার জন্যে ভিজিট করুন: https://bdris.gov.bd/br/application/status
হ্যা নিশ্চঅয়ই, আপনি চাইলে আপনার নিজের নাম কিংবা পিতা মাতার নাম চেঞ্জ করতে পারবেন।
এজন্য জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের সাধারণ নিয়মটি ফলো করলেই হবে।
জন্ম নিবন্ধন আবেদন প্রিন্ট করার জন্যে ভিজিট করুন: https://bdris.gov.bd/application/print এরপর আবেদন নাম্বার, আবেদনের ধরণ এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি দিয়ে আবেদনপত্র প্রিন্ট করতে পারবো।
আবেদন ফরম ডাউনলোড করার জন্য আগে ফরম টি প্রিন্ট করার অবস্থায় যান। এজন্য এই লিংকে https://bdris.gov.bd/application/print ভিজিট করে প্রিন্ট বাটনে ক্লিক করতে হবে। তারপর সেখানে PDF ডাউনলোড করার অপশন পেয়ে যাবেন।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে যা যা লাগে আমরা সব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এরপরও কোনো প্রশ্ন থাকলে আপনারা অবশ্যই কমেন্ট করবেন। আপনার কমেন্টের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।